মানিব্যাগ ব্যবহার করা শুরু
করেছিলাম অনেক পরে, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিকে। জীবনে প্রথম অন্য শহরে, বাসার বাইরে থেকে পড়ালেখা, নিজেকে নিজেই গুছিয়ে রাখতে
হবে বলে কথা। এর পরে আরেকটা মানিব্যাগ কিনেছিলাম পঞ্চম বছরে, যেটা কিনতে অনেক দিন ধরে
আমাকে ভাবতে হয়েছে, আসলেই নতুন কোন মানিব্যাগ লাগবে কিনা। জীবনের প্রথম মানিব্যাগটাকে
ছেড়ে দিতে সময় লেগেছিল কয়েক সপ্তাহ, অনেকদিন নিজের সাথে বিতর্ক
করে শেষমেশ একটা নতুন মানিব্যাগ কিনেছিলাম।
এইটা আমার একটা অদ্ভুত
সমস্যা। জড়, অসাড়, প্রাণহীন (কিছু ক্ষেত্রে বিমূর্ত) কিছু বস্তুর প্রতি এই অহেতুক
টান। এখানে পরিষ্কার করা দরকার, হোর্ডিং নামক ডিস অর্ডার টা আমার
নাই। আমার অবস্থাটা একটু বিচিত্র বলতে হয়। হঠাত হঠাত কিছু জিনিসের প্রতি এক অহেতুক, প্রচন্ড টান অনুভব করি।
অনেকটা নস্টালজিয়ার মত। হঠাত একটা গান শুনে, একটা কিছু খেয়ে, একটা গন্ধ নাকে এসে লাগার
সাথে সাথে একটা ধাক্কা, তারপর পৌছে যাবেন আপনার শৈশোব কিংবা যৌবনে। মুহূর্তের মধ্যে মনের
পর্দায় ভেসে উঠবে একগাদা স্মৃতি, অনুভূতি। তারপর, এর চেয়েও দ্রুত চোখের পলকেই উধাও হয়ে যাবে!
এবং পুরো ব্যাপারটা একজনকে নিস্তব্ধ, অকেজো করে রেখে যাবে, কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে
অবস্থাভেদে কয়েক দিনের জন্য! সব না হলেও অধিকাংশ মানুষ এই বিস্ময়কর যাত্রাটার
মধ্যে দিয়ে গেছেন।
আগে শুধু মানুষের মুখেই
শুনে আসছিলাম নস্টালজিয়া শব্দটা, আমার সাথে নস্টালজিয়ার পরিচয় শুরু বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বছর থেকে, এর সম্পূর্ণ তেজ অনুভব করি
তৃতীয় বছরে। সে এক আলাদা কাহিনী, তবে আমি কয়েক মাসের জন্য কেমন অকেজো
হয়ে গেছিলাম। নস্টালজিয়ার সামনে আমি এমনিতেই দুর্বল। নস্টালজিয়া গ্রীক দুইটি
শব্দের মিশ্রণ, যার
অর্থ দাঁড়ায় ঘরে ফিরবার আকুলতা। শুধু আক্ষরিক অর্থে ঘরই নয়, বরং বিগত সময়গুলোকে ফিরে
পাবার আকাঙ্খা। প্রিয় স্মৃতিগুলোর সাথে বাস্তবতার অমিল হলেই অসহায় লাগে। একবার
ছুটিতে বাসায় এসে দেখলাম নানীবাড়ির নিম গাছটা কেটে ফেলা হয়েছে, বুকে ধক করে লাগল। আরেকবার
বাসায় এসে যখন দেখলাম আমার রুমের ফার্নিচার গুলা সরিয়ে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে, আম্মুর ওপর অনেক রাগ হয়েছিল, নিজে নিজেই কয়েকদিন পর আবার
আমার রুম আগের মত করে ফেলেছিলাম। যখন এসে দেখলাম পাড়ার পুরানো রাস্তাটা বড় করার
জন্য দুপাশের পুরানো বিল্ডিংগুলা ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে, যেগুলা দেখে দেখে, যেগুলার খোলা বারান্দায়
কুমির-ডাঙ্গা খেলে আর ঘুড়ির সুতায় মাঞ্জা দিয়ে কেটেছিল ছেলেবেলা, অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। বেশ
কয়েকদিন ওই রাস্তা ধরে হাটতে পারিনি। একই ঘটনা ঘটল যখন পাব্লিক লাইব্রেরীর পুরানো
বিল্ডিংটাও ভেঙ্গে ফেলা হল। প্রায় এক মাসের মত ওই রাস্তাটা এড়িয়ে গেছি। একসময় মেনে
নিতে হয়েছে।
কেন এই রকম আচমকা দু একটা
তুচ্ছ বস্তুর প্রতি এই আশ্চর্য টান? কেন পরিচিত বস্তুর আচমকা
পরিবর্তনে এরকম অসহায় লাগে? এই ঘটনাটা মোটেই আহ্লাদি নয়। এর সাথে জড়িয়ে আছে আরো একটি গভীর ও
জটীল বিষয়। তা হল আমাদের পরিচয় (identity)। চারপাশে
আমরা যা দেখে আসি, যা কিছুর সাথে আমাদের দৈনন্দিন মিথস্ক্রিয়া বা যোগাযোগ করি, যা কিছু আমাদের মন কে উস্কে
দেয়, আমাদের ভাবতে শেখায়, সবই আমাদের পরিচয়ের অংশ।
ছোটবেলার খেলার পুতুল থেকে শুরু করে পছন্দের খাবার, প্রিয় কোম্পানীর রংপেন্সিল, বাসার এক জরাজীর্ণ দেয়াল, খসে পড়া ইট সুড়কি সবকিছুকেই আমরা আমাদের
পরিচয়ের সাথে জুড়ে ফেলি। পরিচয় বা identity খুবই জটিল একটা বিষয়।
আমাদের অজান্তেই কখন কীভাবে গড়ে উঠবে বলা মুশকিল। আপাত অপ্রয়োজনীয় বা তুচ্ছ এই
ব্যাপার গুলা কেন আমাদের পরিচয়ের অংশ হয়ে ওঠে সেটাও বেশ মজার। আসলে আমরা মানুষ
হিসেবে পরিবর্তনের শেকলে বাঁধা। প্রতিদিন আমাদের শরীরের অনু-পরমানু গুলা
প্রতিস্থাপিত হচ্ছে। একজন মানুষের শরীরের প্রতিটা অনু-পরমানু প্রতিস্থাপিত হতে
মোটামুটি সাত বছর সময় লাগে। অর্থাৎ টেকনিক্যালি, সাত বছর পর আপনি সম্পুর্ন
নতুন আরেকজন। এ তো গেল শরীরের ভেতরের ব্যাপার। বাইরেও চলে এই পরিবর্তনের, ভাঙ্গা-গড়ার খেলা। আমরা বড়
হচ্ছি, শৈশব-কৈশর-যৌবন-প্রাপ্তবয়স্ক-বৃদ্ধ, প্রতি ধাপে পরিবর্তিত হচ্ছে
আমাদের ধ্যান-ধারনা, জ্ঞান-গরিমা, দৃষ্টিভঙ্গি ও চারপাশ। পরিবার-বন্ধু
হারাচ্ছি, নতুন সঙ্গ খুজে নিচ্ছি। গ্রাম শহর হচ্ছে, মেঠো পথ রাস্তা হচ্ছে, পাড়ার ঘুড়ি-লাটাই-লাটিমের
দোকানের যায়গায় হচ্ছে শো-রুম। পরিবর্তন আমাদের তুচ্ছ অনুভুতিগুলোর তোয়াক্কা করে
না। এই ব্যাপারটাকে অনেকটা প্রশমিত করে নস্টালজিয়া। আমরা যে সমস্ত জিনিসের সাথে
আমাদের পরিচয়টা কে জুড়ে রেখেছি, এই জন্যই সেই জিনিসগুলোর প্রতি
আমাদের এত টান। প্রযুক্তির এই যুগে, আমাদের অনুভুতিগুলাকে
অনেকটা নেগেটীভভাবে দেখা হচ্ছে, দুর্বলতা বলে ধরা হচ্ছে, এবং এই অনুভুতিগুলার জন্য
সমাজ আমাদের রীতিমত অপরাধী হিসেবে প্রতীয়মান করছে। আর সেই জন্যই এই অহেতুক
বস্তুগুলোর প্রতি আমাদের এত টান। এগুলাই আমাদের পরিচয়ের শেষ অংশ। এগুলা কেড়ে নিলে
আমাদের যে অস্তিত্বই থাকে না!
Lifetime
Retrieval Curve নামে একটা গ্রাফ আছে, যেটাতে দেখা যায় সাধারনত
১৫-৩০ বছর বয়সে যে স্মৃতি গুলা আমাদের তৈরী হয়েছে, সেগুলার জন্য আমরা বেশি
নস্টালজিক। গ্রাফের এই জায়গাটাকে বলা হয় Reminiscence Bump । আসলে
এই ১৫-৩০ বছরের সময়টাতেই আমাদের ব্যক্তিগত পরিচয় গুলা গড়ে ওঠে। শুধু তাই ই না, জীবনের গুরুত্বপূর্ন
সময়গুলাতে যেমন বয়ঃসন্ধি, নতুন শহরে যাওয়া, বা সঙ্কটের মুহুর্তগুলাতে
নস্টালজিয়া প্রকটভাবে দেখা দেয়। খেয়াল করলে দেখা যাবে এই সময়গুলাতে হঠাত করে আমরা
অনেকগুলা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বছরের ওই সময়টাতেও
একটা বিশাল মানসিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। একদিন হঠাত অনুধাবন করলাম, আমার হয়ত নিজের শহরে আর
ফিরে আসা হবে না কোনদিন, যেন
আমি চিরতরে সব ইতিমধ্যেই ফেলে এসেছি। সঙ্কট, অনিশ্চয়তা, ও বাস্তবতার এই সন্ধিক্ষনেই
টের পেয়েছিলাম নস্টালজিয়ার শক্তি। পরিবর্তনের একধরনের প্রতিক্রিয়া হল নস্টালজিয়া। একধরনের সামাল দেবার
প্রক্রিয়া অর্থাৎ Coping Mechanism।
আমরা বড় হয়েছি আমার
নানিবাড়িতে; উঠান আলা, নিম গাছ আলা, মায়াময়, পুরানো একতালা একটা বাড়ি।
এই উঠানে ছোটাছুটি করে, মাটি খুড়ে, নিমগাছে টাঙ্গানো দোলনায় চড়ে, পেয়ারা গাছে উঠে, ভাড়া দেয়া রূপম প্রেস এর সীসার হরফ চুরি করে
আমাদের বড় হওয়া। এ ধরনের খুবই পরিপুর্ন শৈশব পাওয়ার একটা খারাপ দিক হল নস্টালজিক
হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে আমার অস্তিত্বই যেন নানিবাড়িকে
ঘিরে। নানিবাড়ির যে কোন পরিবর্তনেই বিচলিত হই। নানু চলে যাওয়ার এক বছর হয়ে গেল।
আমার আম্মু-খালা-মামারা নানিবাড়ির যায়গাটাতে এপার্টমেন্ট বানাবে। প্রথম প্রথম শুনে
বিশ্বাস করতে পারিনি। নুন ধরা দেয়াল আর উঁই ধরা দরজা জানালা গুলা নাকি আর থাকবে
না। তা কি করে হয়? আমার কাছে ওইটাই সত্য। ওইটাই চিরন্তন। স্থাপত্যে পরার কারনে আমাকে
প্রথমে প্ল্যান করতে বলা হয়েছিল। আমি না করেছি। ওই যায়গায় হাত দেয়ার স্পর্ধা আমার
নাই, ওই মায়াময় উঠান নষ্ট করার বুকের পাটাও আমার নাই। আরও শুনছি আমার
শিক্ষিত মা-খালা-মামারা নাকি সেটব্যাক না মেনেই অনেকগুলা ঘিঞ্জি ইউনিটের
এপার্টমেন্ট বানাবে। যেদিন শুনেছিলাম রাতে ঘুমাতে পারিনি।
প্রতিদিন নানিবাড়িতে যাওয়া
তো হয় না, তবে বিশ্বাস করুন যতদিন আমি জানছি উঠানটা আছে, যতদিন জানালা দিয়েই তাকালেই
দেখতে পাই উঠানে এক চিলতে রোদ, রোদে শুকাতে দেয়া আচারের বোয়াম, লেজ এলিয়ে দিয়ে শুয়ে থাকা
অলস বিড়াল, অথবা বৃষ্টিভেজা বেদীর ফুলগাছগুলা, ততদিন মনে হবে আমি নিরাপদ
আছে, জগতের কোন শক্তি আমাকে হারাতে পারবে না। বিশ্বাস করুন, আমার পরিচয় যে ওই উঠানের
সাথে গেঁথে দেওয়া!
একটা উঠানের জন্য, একটা জরাজীর্ন বিল্ডিং এর
জন্য এতকিছু অনুভব করতে কে শেখাল জানি না। হয়ত জীবনের এই পর্যায়ে একটা বড়সড়
পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি বলে এই জরাজীর্ন স্মৃতি আর খসে পড়া ইট সুড়কীর প্রতি
এত ভালবাসা। হয়ত এত বছর নিজের শহর, নিজের ঘর থেকে দূরে থাকার
কারনে এই অহেতুক অনুরক্তিগুলো তৈরী হয়েছে। হয়ত কিছুদিন পর এই অনুভুতিগুলোও মিলিয়ে
যাবে। তবে যেদিন থেকে নতুন এপার্টমেন্ট এর কাজ শুরু হবে, আমার ভেতরের একটা অংশ
চিরতরে মরে যাবে। নিজেকে নিয়ে আর কোনদিন এত গর্ব করতে পারব না, এত দৃঢ় থাকতে পারব না।
পরিবর্তন কে কে ই বা আর আটকাতে পারবে। বাসা না বানিয়ে আমার মা-খালা-মামারাই বা
কই যাবে? পরিবর্তন তো হতেই হবে, নতুনকে আসতেই হবে। উঠানের
যায়গায় থাকবে চকচকে এপার্টমেন্ট। কিন্তু আমি মেনে নিতে পারব না। কোনদিন না।
----------------------------------------------------
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ঃ
রাত ১ টা বাজে। উঠানসমেত নানীবাড়ি আর দু' তিন মাস আছে খুব জোড়। যে কয়টা দিন আছে যত পারা যায় ছবি তুলে রাখছি। একটা প্ল্যান আর থ্রিডি মডেল ও করে রাখার ইচ্ছা আছে। তোলা ছবিগুলোর কয়েকটা ঘষামাজা করছিলাম আপলোড দিব বলে (ইয়ারফোনে বাজছিল হ্যামকের গান, কেন জানি মনে হল এটা লিখে রাখা উচিৎ)। ঠিক এই সময় হঠাৎ একটা ধাক্কা কোথা থেকে খেয়ে বসলাম। অনেকদিন ধরেই নিজেকে বলে আসছি, এটাই হবার, একদিন নানীবাড়ি ভাঙ্গা হবে, এটাই নিয়ম, এটাই সত্যি। তারপরও এইসব হাবিজাবি চিন্তা করতে করতে, ছবি গুলার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঠিক কী একটা হল বুঝলাম না।
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ঃ
রাত ১ টা বাজে। উঠানসমেত নানীবাড়ি আর দু' তিন মাস আছে খুব জোড়। যে কয়টা দিন আছে যত পারা যায় ছবি তুলে রাখছি। একটা প্ল্যান আর থ্রিডি মডেল ও করে রাখার ইচ্ছা আছে। তোলা ছবিগুলোর কয়েকটা ঘষামাজা করছিলাম আপলোড দিব বলে (ইয়ারফোনে বাজছিল হ্যামকের গান, কেন জানি মনে হল এটা লিখে রাখা উচিৎ)। ঠিক এই সময় হঠাৎ একটা ধাক্কা কোথা থেকে খেয়ে বসলাম। অনেকদিন ধরেই নিজেকে বলে আসছি, এটাই হবার, একদিন নানীবাড়ি ভাঙ্গা হবে, এটাই নিয়ম, এটাই সত্যি। তারপরও এইসব হাবিজাবি চিন্তা করতে করতে, ছবি গুলার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঠিক কী একটা হল বুঝলাম না।
বাচ্চাদের মত কেঁদেছি বসে বসে বেশ কিছুক্ষন।
বাচ্চারা যেমন বাস্তবতা, যুক্তি না মেনে কাঁদে, ওইরকম।
জীর্ণ বাড়িটা এক টুকরা বাচ্চামি এইভাবে ফিরিয়ে দিবে জানা ছিল না।
এক্টুও প্রস্তুত ছিলাম না।
কখনো হতে পারবো কিনা তাও জানিনা...
----------------------------------------------------
২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২ঃ
২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২ঃ
মামা-মামীরা আজ চলে গেল নানীবাড়ি ছেড়ে। ডেভেলপার দিয়ে ওখানে বিদঘুটে এপার্টমেন্ট বানানো হবে কয়েকমাসের মধ্যে। আমার রুম থেকে নানীবাড়ির রান্নাঘরের আলো দেখা যেত। এখন থেকে জানালা দিয়ে তাকালেই ঘোর অন্ধকার দেখতে পাব। নিঃশব্দ। মৃত।
আপনি যেটাকে "নস্টালজিয়া" বলছেন সেই কোপিং মেকানিজমকে একটু অন্য নামে ডাকি... প্যারাডাইম শিফট। যদিও আক্ষরিক অর্থে প্যারাডাইম শিফট একদমই আলাদা বস্তু! আকাঙ্ক্ষার সাথে, কল্পনার সঙ্গে বাস্তবতার সংঘর্ষ; পুরোনোর সঙ্গে নতুনের সংঘর্ষ; নিজের সঙ্গে নিজের সংঘর্ষ। একটু বুদ্ধিমান এবং অস্তিত্বসচেতন মানুষ হলে এই ভোগান্তি সম্ভবত সারাজীবনেরই... জানিনা। তীব্র প্যারাডাইম শিফটের সময়গুলোতে নিজের low নিয়ে কাতর থাকা ভোগান্তিতে অন্য মাত্রা জোগায়। I always wondered "আমি এত দুর্বল কেন? নিজেকে কেন সামলাতে পারিনা? Why a shoulder to lean on is kind of a necessity to me!" But the curve of my restlessness lowered when I read this and thought there are many people who may be weak inside, broken into pieces, but self acceptance can be graceful... and it can bring me close to myself, peace(আপাত) can be found in solidarity. "এত ভেবোনা এসব নিয়ে, এমন তো সবারই হয়" ইত্যাদি কথার পরেও দুঃখবিলাসে (অন্যের ভাষায়) পাপের কিছু নেই। এসব নিয়ে অনেক কথা বলাতে, কষ্ট পাওয়াতে, কাঁদায় দোষের কিছু নেই।
ReplyDeleteMay your shifts be less hefty.
ঠিক জানিনা আপনি কে কিন্তু আপনার কমেন্ট দেখে আজ খুব ভালো লাগলো। আসলে এটা অনেকখানি পার্সোনাল ব্লগ হয়ে গেছে, নিজে কী এক্সপেরিয়েন্স করছি, কী কী বিষয় নাড়া দিচ্ছে এগুলো লিখে রাখি টুকটাক। শুধু ওইটুকুই- লিখে রাখা – চিকিৎসার মত কাজ করে, চিন্তার জট খুলতে সাহায্য করে। এইজন্য কমেন্ট সাধারণত চেক করা হয় না। হঠাত আপনার কমেন্টটা পড়ে কেমন জানি খুশি লাগছে।
Deleteঠিকই বলেছেন, হয়ত অস্তিত্বসচেতনতার একটা অভিশাপ এইটা। সবসময় কল্পনার সাথে বাস্তবতার, প্রগ্রেস এর সাথে আবেগের সংঘর্ষ। এতদিন বুড়োরা অতীত নিয়ে স্মৃতিচারণ করত, আজ আমরা করছি। বুড়া হয়ে যাচ্ছি মনে হয়। লোকে ভাবে আমরা প্রগ্রেস, আধুনিকতার বিরুদ্ধে। irrelevant হয়ে যাচ্ছি, এভাবেই মনে হয় সভ্যতা মানুষকে irrelevant করে দেয়, alienate করে দেয়।
আমি এত দুর্বল কেন গড়ে প্রতিদিন মনে হয়, একটা মানিব্যাগ কিনতে এতকিছু চিন্তা করা লাগে। সারাজীবন এই একটা ভাঙ্গাচোরা উঠানকে ধ্রুব সত্য হিসেবে ধরে নিয়েছি। নিজেকে anchor করে রেখেছি এর মাধ্যমে। শেকড় বলতে পারেন। যতদিন ছিল স্রেফ একটা উঠানই ছিল। মুল্য বুঝতে বুঝতে খুব দেরি হয়ে গেছে। যায় হোক নস্টালজিয়ার জন্য তো দুনিয়া থেমে থাকেনা। আমিও বুঝি এসব আসলে একধরনের whim, একধরনের romanticized selfishness - দুঃখবিলাস যেমনটা বললেন, তারপরেও অনেস্ট তো! বাকীরা না বুঝলো, অনুভূতিগুলাকে তো আমারই tackle করতে হয়!
কমেন্ট এর জন্য ধন্যবাদ! I wish you all the happiness!