বুমেরাং
অন্যতর কথা ভিন্নতর শব্দের অনিয়মিত ছড়া
পত্রিকা
দ্বিতীয় নিক্ষেপঃ ফাল্গুন, ১৩৮৪ (১৯৭৮ ইং)
আজকে একুশ বঙ্গদেশে রঙ্গ কেমন বুঝছ?
দাঁড়কাকেরা হচ্ছে ময়ূর লাগিয়ে ময়ূর পুচ্ছ।
চাঁদ তারাতে তুলত নিশান রক্ত খেয়ে ঢেকুশ
দিচ্ছে তারা গুম্ফ চাঁড়া, হেই হুঁশিয়ার একুশ!
তাদের সাথে সখ্য যাদের
সখের গদি লক্ষ্য যাদের
এবং যারা বাঁচার দাবী করছে আজও তুচ্ছ
সবার গোরে দেবোই বাতি ধুতরা ফুলের গুচ্ছ।
___________________________
ফরিদুর রহমান বাবলু ও
জহুরুল আলম মনি
সম্পাদিত
সহযোগী
মাহবুবা বেগম হেনা
আহমেদ মুর্তজা রেযা কর্তৃক
পূর্ব/১, শেরে বাংলা হল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
প্রকাশিত
মুদ্রন
মুকুল প্রিন্টিং প্রেস
ঘোড়ামারা, রাজশাহী
ব্লক নির্মাণ
উত্তর বাংলা প্রসেস ওয়ার্কস
বগুড়া
প্রচ্ছদ ও কার্টুন
জহুরুল আলম মনি
_________________________________
১. দিলওয়ার
বস্তা পচা সস্তা গানে
নিত্যি কাঁদে বেতারে
রাস্তা মাপে ওস্তাদেরা
অস্থি চুষে সেতারে
কটকটিয়ে শকুন হাসে
বুড্ঢা গাছের মাথাতে
‘আগুন বিছা’ মৌমাছি তাই
সরস সবুজ পাতাতে।
চমকে উঠি হাতের ফুলে
বসলো কেন দন্তরে?
মুক্তি কোথায় আদ্যিকালের
অন্তরে আর মন্তরে?
_________________________________________________________________________
বসলো কেন দন্তরে?
মুক্তি কোথায় আদ্যিকালের
অন্তরে আর মন্তরে?
_________________________________________________________________________
২.আব্দুল মান্নান টিপু
এক.
খুন করেছো গুম করেছো করলে বুকে গুলি
লক্ষ শহীদ রক্ত দিলো কেমন করে ভুলি
দিন পেয়েছ ভাবছো বসে
আবার টুঁটি ধরবে কষে
শুনিয়ে দিবে ধর্ম কথা বলবে মধুর বুলি।
জয় জাগছে ভয় ভাঙছে ভোর হতে নেই দেরী
হাজার পায়ে এগিয়ে যাবে এবার প্রভাত ফেরী।
দুই.
দুই এক্কে দুই এবং দুই দুগুনে চার
আল বদরে ফাল মারে আর লাফায় রাজাকার
একটা কথা রাখবে মনে তিন দুগুনে ছয়
আমার দেশে আর তোমাদের জায়গা হবার নয়
_________________________________________________________________________
খুন করেছো গুম করেছো করলে বুকে গুলি
লক্ষ শহীদ রক্ত দিলো কেমন করে ভুলি
দিন পেয়েছ ভাবছো বসে
আবার টুঁটি ধরবে কষে
শুনিয়ে দিবে ধর্ম কথা বলবে মধুর বুলি।
জয় জাগছে ভয় ভাঙছে ভোর হতে নেই দেরী
হাজার পায়ে এগিয়ে যাবে এবার প্রভাত ফেরী।
দুই.
দুই এক্কে দুই এবং দুই দুগুনে চার
আল বদরে ফাল মারে আর লাফায় রাজাকার
একটা কথা রাখবে মনে তিন দুগুনে ছয়
আমার দেশে আর তোমাদের জায়গা হবার নয়
_________________________________________________________________________
৩.
সুকুমার বড়ুয়া
এক.
বাবারে বাবা
গায়েবী বাবা।
তুমিই চরম
তুমিই পরম
তোমার হাতেই
জীবন মরণ
বসাও ফুলে
চড়াও শুলে
গা’য় ঢেলে দাও
তপ্ত লাভা।
তোমার চালে
তোমার তালে
মিলতে যদি
ভুল হয়ে যায়
ছুঁড়বে লাথি
মারবে থাবা।
রক্ত দেবো
মাংস দেবো
অস্থি দেবো
খেলতে দাবা।
হঠাৎ কবে
শুনতে পাবো
গিলছে তোমায়
আরেক বাবা।
দুই.
পড়লো ধরা কুমড়া চোর
সাধুর গায়ে বারলো জোর
চালায় ঘুষি চালায় কিল
থ্যাঁতলা দেহ করছে নীল
উঠতে গিয়ে পড়ছে ঢলে
চেঁচায় ‘বাবা বাবা’ বলে
ভীড়ের মাঝে বললো কে সে
চোরের বাবাই সাধুর বেশে।
মুখটা ঢেকে সুকৌশলে
চোর মেরেছে ডাকুর দলে
এ কাজতো তারাই পারে
দ্বিগুণ চর্বি যাদের ঘাড়ে।
_________________________________________________________________________
৪.নিয়ামত হোসেন
এক.
বরদের দর বেশী
কনেদের মূল্য
হয় নাকো টায় টায়
বরদের তুল্য।
হয় যদি সু চাকুরে
কোন কোন বররা
দেমাকে অদের পিতা
একেবারে ছররা!
মেয়েদের বাপ হয়
ফতেপুর সিক্রি
কি ভাবে করবে তারা
মেয়েদের বিক্রি!
দুই.
গাড়ী ছোটে ক্রমাগত মসৃণ রাস্তা
‘ইটালি’ হোটেলে কেউ সেরে ফেলে নাস্তা।
তিন.
কাজ করে বহু লোকে
দুই-তিন শিফটে
কেউ যায় নিচে নেমে
কেউ ওঠে লিফটে।
কারো কাজে তারা, কেউ
তাশ খেলে বেশ
কেউ খাটে, কারো হাতে
উড়ো ব্রিফ-কেস।
_________________________________________________________________________
কাজ করে বহু লোকে
দুই-তিন শিফটে
কেউ যায় নিচে নেমে
কেউ ওঠে লিফটে।
কারো কাজে তারা, কেউ
তাশ খেলে বেশ
কেউ খাটে, কারো হাতে
উড়ো ব্রিফ-কেস।
_________________________________________________________________________
৫. মনোজ দাশগুপ্ত
এক.
সাবাস বেটা ফিকির মির্জা জবর খেলোয়াড়
বহুত সাবাস
জবাব নেহি
বাদ্যি বাজায় ষাঁড়,
মস্তকে তোর বুদ্ধি বটেন দিনকে বানাস রাত
মুখ ছুঁলি কি বাত নেহি হ্যায় ক্যায়সা তেলেসমাত!
দুই.
থিয়েটারের উজির রাস্তা
মন্ত্র ভাজেন টাটকা তাজাঃ
প্রজার চোখে পট্টি দিলে জগতটা হয় সোজা।
সেলাম গুরু সেলাম
হাজির আছি গোলাম
পট্টি কষাও গাট্টা হাঁকাও প্রভুর জয় হররা
আর ব্যাটারা বলে বলুক নাক কাটা এক দামরা।।
_________________________________________________________________________
৬. আখতার হোসেন
আমরা সবাই রাম গড়ুরের ছানা
হাসতে গাইতে এক্কেবারে মানা।
কাজের মত কাজ পেয়েছি
কেবল ঘানি টানা,
আমরা সবাই রাম গড়ুরের ছানা।।
হাসতে গেলে ফাইন
গাইতে গেলে ফাইন
পথ চলতে শাসায় কেবল
বুলেট, গুলি, মাইন।
পেছন থেকে পাগলা ষাঁড়ে
দিচ্ছে কষে হানা।
আমরা সবাই রাম গড়ুরের ছানা।।
আমাদের মনিব খুবই ভাল
নেই তুলনা তার
ষাঁড় ভেঙে যায় তবুও তিনি
চাপান বোঝার ভার।
ঘরের চালে আগুন
জলছে পেটে আগুন
মনিব তবু কন যে হেসে
আসছে দেশে ফাগুন।
আমরা কিছু বলতে গেলে
করছে জরিমানা।
আমরা সবাই রাম গড়ুরের ছানা।।
_________________________________________________________________________
৭. আলতাফ আলী হাসু
এক.
দল মানে না জল মানে না মুখে মহান অতি
দেশের লোকে কেউ বোঝে না তেনার মতি গতি
অতি বামের ধ্বজাধারী অতি ডানের দোস্ত
নিরপেক্ষ নিজেই খান নিজের গায়ের গোস্ত
খেলার মাঠে সুখের কথার ওড়ান প্রজাপতি।।
রুইয়ের ঠাটে রাজ্য পাটে মস্ত বড় কাতলা
ব্যাং গেলে না আইন কানুন কলজেটা তার পাতলা
যেমন কুকুর তেমন মুগুর
কিন্তু তবু খেই মেলে না পালাবার পথ বাতলা।।
দুই.
হবু রাজার রাজ্যে নাকি ছিল আজব দুই গাধা
একটা শুধায় আরেকটারে তুই গাধা না মুই গাধা
একটা গাধার হাতে লাঠি বলে আমি ভুতের ওঝা
আরেক গাধার মাথায় আইন বলে টানি ধোপার বোঝা
তারা দু’জন কল্পলোকে ভুঁইফোঁড় বা ভুঁইগাধা।।
_________________________________________________________________________
৮. সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ
গণতন্ত্র দেখতে কেমন
তার ঠাঁটটি কেমন
ডাঁটটি কেমন
কেউ দেখেনি?
কেমন যে তার
নাকের নোলক
মুখের শোলক
মাথার মনি?
এস রে ভাই
তবে দেখাই
ঢাকার হাটে
গড়ের মাঠে
ঐ দেখো না
লক্ষ্মী সোনা
কামান দাগার
বিকট যন্ত্র।
ডালিম কুমার
ভাষণ দিছে
‘এই যে হলো গণতন্ত্র’।
_________________________________________________________________________
৯. শান্তিময় বিশ্বাস
হালুম!
গোঁফ দেখে আর দাঁত দেখে আর
ডোরা কাটা সার্ট দেখে তোর
হয় না বুঝি মালুম?
আমিই যে এই বানর রাজা হালুম?
থাবায় আছে মস্ত নখর
দিষ্টি আমার তীব্র প্রখর
কাঁপিয়ে ফিরি বন,
যখন আমি ‘হালুম’ ছাড়ি
থর থরিয়ে কাঁপে সবার মন!
হয় না মালুম?
হয় না বুঝি মালুম?
মালুম হবে যখন তোরে
ঘাড়খানাকে মটকে ধরে
মরণ চিতা জ্বালুম।
_________________________________________________________________________
No comments:
Post a Comment